শিশু মানেই চঞ্চলতা, হাসি, দুরন্তপনা, দস্যিপনা। শিশু মানেই অকারন হাসি, অকারন কান্না। শিশুর উপস্থিতি থাকবে, অথচ হৈচৈ থাকবেনা, দুষ্টুমির অতাচার থাকবেনা এটা ভাবা যায়না, এমনটা চাওয়াও উচিত না। শিশুর শৈশব এমনই দুরন্ত ও আনন্দের হওয়া দরকার। কিন্তু আমাদের অক্ষমতা ও দুর্ভাগ্য এই যে, সকল শিশু আনন্দের শৈশব পায়না। এই সময়েই দুষ্টুমি, হাসি-খেলা বাদ দিয়ে অনেক শিশুকে নেমে পড়তে হয় জীবন সংগ্রামে, মুখোমুখি হতে হয় কঠিন বাস্তবতার।
নাজিরারটেক শুটকি পল্লীতে বসবাস করে অনেক দরিদ্র পরিবার যারা এই পল্লীতে কাজ করেই জীবিকা নির্বাহ করে। এই পরিবার গুলোই যে শিশুরা জন্মগ্রহণ করে তাদেরকেও জীবন পরিক্রমায় একসময় এই কাজে জড়িয়ে পড়তে হয়। কারন এই এলাকায় নেই কোন ভাল স্কুল, নেই অন্য কোন ভাল কর্ম সংস্থানের সুযোগ। দরিদ্র পরিবার গুলো থেকে কেউ সৌভাগ্যের কোন জীবন পেয়েছে এমন ঘটনাও খুবই কম। ফলে দরিদ্র পরিবার গুলো সন্তানদের পড়াশোনার প্রতিও তেমন আগ্রহ দেখায়না। তাছাড়া এই পরিবারগুলোর আর্থিক অসচ্ছলতার কারনে বেশিরভাগ সময় সন্তানদের পড়াশোনার ব্যবস্থা করা সম্ভব হয়না।
নাজিরারটেকের ছোট বন্ধু জাহিদ কথা বলেছিল রেডিও সৈকত এর সাথে। ক্লাস ওয়ান পর্যন্ত পড়ে পরিবারের দারিদ্রের কারনে পড়াশোনা বন্ধ হরতে হয় তাকে। পরিবারে অসুস্থ বাবা আর গৃহীনি মা আর বেকার বড় ভাই। পড়াশোনার ইচ্ছে থাকা সত্তেও দারিদ্র্য ও নানান সমস্যায় স্কুলে যাওয়া হচ্ছেনা।
তার কথায় প্রকাশ পেয়েছে আক্ষেপ ও কষ্ট, পড়তে না পারার, পরিবারের দারিদ্রের ও অক্ষমতার। আমরা চাইনা এমন আক্ষেপে কোন শিশু বেড়ে উঠুক। “হাসি আর গানে ভরে যাক সব শিশুর অন্তর, প্রতিটি শিশু মানুষ হোক আলোর ঝরনা ধারায়”, রেনেসাঁর গানে সুর মিলিয়ে রেডিও সৈকত ও কামনা করে আলোর ঝরনা ধারায় শিশুর জীবন কাটুক।