প্রাণ হাতে নিয়ে যাঁরা উত্তাল সাগরে মাছ ধরতে যান, তাঁরা হলেন মৎস্যজীবী। মাঝদরিয়ার তুফান যেকোনো সময় তাঁদের গ্রাস করতে পারে, সেই ভয় তাঁরা পায়ে মাড়িয়ে দেশের মানুষের মৎস্যের চাহিদা পূরণ করতে সাগরে যান। কিন্তু বৈরী আবহাওয়া আর সাগর যতটা না ভয়ংকর, তার চেয়ে অনেক বেশি ভয়ংকর মানুষ। মানুষের মতো দেখতে এই অমানুষগুলো হলো জলদস্যু। প্রতি বছর জলদস্যুরা সশস্ত্র হামলা চালিয়ে জেলেদের নৌকা দখল করে নেয়। মাছ লুটে নিয়ে তাঁদের জিম্মি করে। মাঝি-মাল্লাসহ একেকটি নৌকার মুক্তিপণ হিসেবে লাখ লাখ টাকা দাবি করে। টাকা দিলে হয়তো মুক্তি মেলে। না দিলে সব জেলের নিশ্চিত মৃত্যু। এ অবস্থা দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে। সাগরের সব খবর ডাঙা পর্যন্ত পৌঁছাতেও পারে না। হতভাগ্য মানুষগুলো কালের গর্ভে হারিয়ে যাওয়ার মতো নীল দরিয়ায় নিখোঁজ হয়ে যান। রেডিও সৈকতের উপকূলীয় মৎস্যজীবীদের জীবন জীবিকা শুনতে গিয়েছিলাম কক্সবাজার উওর নুনিয়ার ছড়া এলাকার জেলে পল্লীতে। কথা বলি মোহাম্মদ হোসেন নামে একজন মৎস্যজীবির সাথে যিনি ১৪ বছর মৎস্যজীবী পেশায় আছেন। এই ১৪ বছরের জীবনে তিনি প্রায় ৩ বার ডাকাতের হাতে জিম্মি হন। তিনি শিকার হয়েছিলেন অকথ্য নির্যাতনের। ডাকাতরা পিটিয়ে তার ডান পা ভেঙে দিয়েছিলো। অপহরণের পর দস্যুরা দিনে তিন চারবার মারধর করে মুঠোফোনে তাঁদের স্বজনদের শোনাত। খাবার দিত না। জীবনের এমন বীভৎস অভিজ্ঞতা তাকে বাধ্য করেছিলো এই পেশা ছেড়ে দিতে। সমস্ত বৈরী প্রতিকূলতা কাটিয়ে তাদের জীবন সুরক্ষিত হোক এই কামনা থাকবে রেডিও সৈকতের।