‘ফ্যাটি লিভার’ রোগটি এখন সারাদেশে ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। লিভারে অতিরিক্ত চর্বি জমলে ফ্যাটি লিভার রোগ হয়। অ্যালকোহল সেবনকারীদের মধ্যে এটি বেশি দেখা যায়। তবে গত কয়েক দশকে নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজের সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে। ফ্যাটি লিভার রোগের বিষয়ে বিস্তারিত জানার লক্ষ্যে আমরা কথা বলি কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মেডিসিন, সংক্রামক রোগ, বাত ও লিভার বিশেষজ্ঞ ডাক্তার জনাব ডা: রাজীব নাথ এর সাথে। তিনি বলেন, ফ্যাটি লিভার লিভারের কোনো একক রোগ নয়। হার্টের সমস্যা, ডায়বেটিসের সমস্যা, কোলেস্টেরলের সমস্যা ইত্যাদির সাথে হাই ব্লাড প্রেশারের রিস্ক ফ্যাক্টর একত্রিত হয়ে ফলশ্রæতি হয় ফ্যাটি লিভার এর। তিনি বলেন, ৪০ বছর বয়সী মানুষদের মধ্যে ফ্যাটি লিভারে আক্রান্তের হার অধিক হলেও ইদানিং তরুণ প্রজন্মের নারী ও পুরুষরাও ফ্যাটি লিভারে আক্রান্ত হচ্ছে। ফ্যাটি লিভারের প্রধান কারণ হলো সঠিক খাদ্যাভ্যাসে অভ্যস্ত না হওয়া ও অস্বাস্থ্যকর জীবন-যাপন করা। যাদের ওজন বেশি, ডায়াবেটিস বা প্রি-ডায়াবেটিস আছে, তাদের এই রোগ হওয়ার আশঙ্কা বেশি। ফ্যাটি লিভার অনেকটা নীরব ঘাতক। স্বাভাবিক বা ফ্যাটের সময় কোনো মানুষই সেভাবে বুঝতে পারেন না। আল্ট্রাসনোগ্রাম করতে গিয়ে ধরা পড়ে। শুরুর দিকে লিভারের চারপাশে কিছু চর্বি জমা হয়, অন্য কোনো লক্ষণ থাকে না। এরপর ধীরে ধীরে সেখানে প্রদাহ শুরু হয়। এ সময় লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। শুরুতে শরীরে শক্তি কমে যায় এবং দুর্বলতা অনুভূত হয় এবং ক্ষুধামন্দা দেখা দেয়। এর বাইরে জন্ডিস হতে পারে। শরীরের বিভিন্ন অংশ, চোখ, মুখ ও হাত হলুদ হতে পারে। এ রোগে রোগীদের অনেক সময় রক্তবমিও হয়। এরপরও চিকিৎসা না করালে সেটি লিভার ক্যান্সারে পরিণত হতে পারে। ক্যান্সার হলে লিভারে চাকা হয়। লিভার বড় হয়ে যায় এবং রোগীরা ক্ষীণ বা অত্যন্ত দুর্বল হয়ে পড়ে। এ রোগে রোগীর আয়ু দ্রুত কমে যায়। এবং এক পর্যায়ে রোগীর মৃত্যু হয়। এই রোগের জন্য সচেতনতা বৃদ্ধি একান্ত প্রয়োজন। দ্রæত সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে এই রোগের প্রার্দুভাব কমবে এই প্রত্যাশা থাকবে রেডিও সৈকতের।