দীপাঞ্চল মানেই বিচ্ছিন্ন কোনো ভূখণ্ডে সাগর ও আকাশের দিগন্তরেখায় অর্ধচন্দ্র ডিঙি নৌকার মিলিয়ে যেতে দেখা। যেখানে ঢেউয়ের পিঠে চেপে যাযাবর পলিমাটি ঠিকানা খুঁজে পায় প্রাণবন্ত গ্রামগুলোর কাঁচা সৈকতে। বঙ্গোপসাগরের সংস্পর্শে থাকায় সবুজ বাংলাদেশের ভ্রমণকারীরাও পরিচিত এমন দৃশ্যের সঙ্গে।
তবে দেশের একমাত্র পাহাড়ি দ্বীপ হওয়ার বিশেষত্বটা মহেশখালীকে আলাদা করেছে আর সব উপকূলবর্তী অঞ্চল থেকে। শুধুই কি পাহাড়ের চূড়া থেকে পাখির চোখে দ্বীপ দর্শন! এখানে আছে দেশের অকৃত্রিম সব সৌন্দর্যের উপাদান।
কক্সবাজার থেকে সাগর পথে দ্বীপ উপজেলা মহেশখালীর দূরত্ব প্রায় ৮ কিলোমিটার। উন্নত স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষার সুযোগ পেতে অধিকাংশ বাসিন্দা কক্সবাজার সদরে যাতায়াত করেন। হতাশার বিষয় হলো মহেশখালীতে যাতায়াতের একমাত্র ভরসা নৌপথ। এই পথে মহেশখালীতে জরাজীর্ণ একটি জেটিঘাট থাকলেও কক্সবাজার প্রান্তে কোন স্থায়ী ঘাট পর্যন্ত নেই। কাঠের তৈরি সাঁকো আর সারিবদ্ধ নৌকা দিয়ে অস্থায়ী ঘাট তৈরি হলেও ভাটার সময় হাঁটু পানি ও কাঁদাপথ পাড়ি দিয়ে উঠতে হয় ট্রলার ও স্পিডবোটে। এতে দুর্ভোগে পড়েন প্রতিদিন যাতায়াত করা অন্তত পাঁচ হাজার মানুষ।
দিনের পর দিন এভাবে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন পর্যটকসহ স্থানীয় যাত্রীরা। এছাড়া একমাত্র নৌ-রুট হওয়ায় এখানে ব্যাপক নৈরাজ্যের সৃষ্টি হয়েছে। জীবন ঝুঁকি নিয়ে স্পিড বোটে উঠতে হয় নারী শিশুসহ সাধারণ মানুষকে। বোটে উঠতে পারা যেন যুদ্ধ জয়ের সমান। দেশের চারদিকে উন্নয়নের জোয়ারে ভাসলেও কক্সবাজার নৌপথ মেরামতে কারো নজর নেই।
মহেশখালীর লাখখানেক মানুষের যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম এই নৌরুটটি মেরামত ও সচল করা এবং বিকল্প পথ তৈরী এখন সময়ের দাবি। এই সমস্যার সমাধানে প্রতিশ্রুতিদানকারী জনপ্রতিনিধি ও সমাজসেবকদের সুদৃষ্টি কামনা করছে রেডিও সৈকত।