আজ বিশ্বজুড়ে অস্থিরতা। চারপাশে হত্যা, ধর্ষণ, অপহরণ, ছিনতাই এসব শুনতে শুনতে আমরা যেন ভুলে যেতে বসেছি আমাদের সমাজে আমরা সব জাতি, গোত্র নির্বিশেষে একসাথে বসবাস করি। সম্প্রীতি সৌহার্দ্য বজায় রেখে বসবাস করার সুন্দর ইতিহাস আমাদের আছে। আমরা একসাথে বিয়েবাড়িতে নিমন্ত্রণ রক্ষা করি। পহেলা বৈশাখে রমনা বটমূলে গান করি পাশাপাশি বসে, পান্তা ইলিশ খাই, মঙ্গলশোভাযাত্রায় হেটে যাই একসাথে গাইতে গাইতে। নববর্ষের সময় বাংলাদেশে যে মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয় ২০১৬ সালে, ইউনেস্কো ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় কর্তৃক আয়োজিত এই উৎসব শোভাযাত্রাকে “মানবতার অমূল্য সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য” হিসেবে ঘোষণা করে।মানুষের প্রতি মানুষের মানবিক প্রীতি- সম্প্রীতির বাণীর আরেকটি নিদর্শন হলো- মেলা।
মেলা শব্দটি শোনার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের মনে আনন্দের অনুভূতি হয়।মেলার আক্ষরিক অর্থ মিলন। মেলায় একে অন্যের সঙ্গে ভাব বিনিময় হয়। উপলক্ষ যাই হোক না কেন, বাঙালির সকল উৎসবের মধ্যে একটা সার্বজনীন রূপ আছে। ধর্ম, সম্প্রদায়, জাত-পাত বা ধনী-গরিবের সামাজিক বিভক্তি বাধা হয়ে দাঁড়ায় না বরং সকল শ্রেণির মধ্যে সেতুবন্ধন রচিত হয়। আর এ কারণেই কালের বিবর্তনের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকতার ধরন পাল্টালেও আবহমান বাংলার সামাজিক উৎসব, পার্বণ বা গণমানুষের মেলবন্ধনের ঐতিহ্য-কৃষ্টিগুলো আজও হারিয়ে যায়নি। মেলা মানেই মহামিলন। মানুষের উচ্ছ্বাস-উল্লাসের বহিঃপ্রকাশ ঘটে মেলার মধ্য দিয়ে। ধর্ম-বর্ণ-সম্প্রদায়ের র্ধ্বে উঠে মেলা মানুষের মধ্যে সম্প্রীতির বন্ধন গড়ে দেয়।