একটা বয়স পর্যন্ত মা-বাবা সন্তানকে অতিরিক্ত আহ্লাদ-আদর দেন। যা চায়, তাই দেয়া হয়। এরপর সন্তান যখন বয়ঃসন্ধিকালে পৌঁছে, তখনই শুরু হয় সংঘাত। তখন অধিকাংশ ক্ষেত্রে সন্তানের দাবি দাওয়া ও চাহিদার সঙ্গে অভিভাবকের মতের মিল হয়না। এদিকে শিশু এটা জেনেই বড় হয় যে, তার অবস্থান পরিবারে একচ্ছত্র, তার চাওয়াই বাবা-মায়ের কাছে শেষ কথা। ফলে এর কোনো ব্যত্যয় হলে অভিভাবকের সঙ্গে সন্তানের দ্বন্দ্ব শুরু হয়, বাড়ে মানসিক দূরত্ব। সন্তানের শিশুকাল থেকেই ‘বুঝিয়ে বলার মাধ্যমে’ বা ‘স্পষ্ট করে কথা বলা’র মাধ্যমে তাদের এই আচরণ বাবা-মায়ের পছন্দ হয়নি বা কাজটি করা ঠিক নয় সেটি বুঝাতে হবে। এভাবে সে তার আচরণ, জেদ, চাহিদাকে সংযত করতে শিখবে। কক্সবাজার সৈকত বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক গোপা সেন বলেন, ‘‘কোনো বিষয়ে শিশুদের না বুঝিয়ে যদি বারবার তাদের নিষেধ করা হয় তাহলে তাদের মনে সেটি প্রভাব ফেলে। খেলার ছলে আনন্দের সাথে শিশুকে বোঝাতে হবে যাতে তাদের আত্মবিশ্বাস বাড়ে। আমরা এমন কোন কাজ করব না যা তাদের মনের উপর কোন খারাপ প্রভাব ফেলে। আমরা তাদের উপর এমন কোনো চাপ সৃষ্টি করব না যার কারণে তারা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। তাদের স্নেহ দিয়ে আদর্শিক শিক্ষার দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। তিনি আরো বলেন, আমরা এক শিশুর সাথে অন্য শিশুর তুলনা করব না। কেননা, এর ফলে তাদের মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্থ হয়। প্রতিভাকে বিকশিত করার জন্য উৎসাহ দিয়ে তাদের আত্মবিশ্বাস বাড়াতে হবে।”
আপনার সন্তানের সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে তুলুন। হয়ে উঠুন তার ভরসার জায়গা। শিশুর সঙ্গে কথা বলুন নিয়মিত। ওকে নিয়ে বই পড়ুন, ওর সঙ্গে ছবি আঁকুন কিংবা খেলুন।
শিশুদের নিয়ে রেডিও সৈকতের বিশেষ অনুষ্ঠান দূরন্ত’র এবারের পর্ব সাজানো হয়েছে ‘‘ শিশুদের আত্মবিশ্বাস বাড়াতে অভিভাবকের করণীয়’’ বিষয়ে। প্রতিটি শিশুর জীবনহোক আনন্দময় এবং শিশুরা আত্মবিশ্বাসের সাথে বেড়ে উঠুক এই প্রত্যাশা রেডিও সৈকতের।